সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ সম্পর্কে আজ আমরা আলোচনা করতে চলেছি। আপনি
যদি সিলেটের মধ্যে অবস্থিত যাবতীয় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে জানতে চান তাহলে
এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে
আর্টিকেলটি শেষ অব্দি পড়ুন।
অন্যান্য সকল দর্শনীয় স্থানের ভিতরে সিলেট একটি। সিলেটে অনেকগুলো নজর কাড়া
দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলো আপনাকে বিষ্মিত করবে। তাই এই আর্টিকেলে আপনার
সুবিধার জন্য সিলেটের যাবতীয় দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা
হয়েছে।
পেজ সূচিপত্রঃ সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ
নিচের যে অংশে পড়তে চান জাস্ট ক্লিক করুন
সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ
সিলেট জেলার দর্শনীয় স্থানসমূহ গুলো পর্যটকদের অনেক প্রিয়। সিলেট জেলায়
দর্শনীয় স্থানের কোন কমতি নেই। সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখতে প্রতিবছর
প্রচুর পর্যটক এখানে ভিড় জমায়। কেননা সিলেট হচ্ছে দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী।
বিশেষ করে শীতের সময় সিলেটে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে। বর্তমান সময়ে অনেক
বাইকাররা দল বেধে সিলেট ভ্রমণ করতে যায়। সিলেট জেলায় অনেকগুলো দর্শনীয় স্থান
রয়েছে। নিচে সিলেট জেলার ৪০ টি দর্শনীয় স্থানের একটি তালিকা দেওয়া হলো-
ক্রমিক নং |
দর্শনীয় স্থান |
০১ |
জাফলং |
০২ |
রাতারগুল |
০৩ |
বিছানাকান্দি |
০৪ |
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর |
০৫ |
লাক্কাতুরা চা বাগান |
০৬ |
ডিবির হাওর বা শাপলা বিল |
০৭ |
হাকালুকি হাওর |
০৮ |
মালনিছড়া চা বাগান |
০৯ |
হযরত শাহজালাল (র:) মাজার |
১০ |
হযরত শাহপরাণ (র:) মাজার |
১১ |
লোভছড়া পাথর কেয়ারী |
১২ |
অ্যাডভেঞ্চার ওয়ার্ল্ড |
১৩ |
নাজিমগড় গার্ডেন রিসোর্ট |
১৪ |
সোনাতলা পুরাতন জামে মসজিদ |
১৫ |
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় |
১৬ |
গাজী বোরহান উদ্দিনের মাজার |
১৭ |
শ্রী শ্রী দুর্গা বাড়ি মন্দির ও ইকোপার্ক |
১৮ |
টিলাগড় ইকোপার্ক |
১৯ |
ক্বীন ব্রীজ |
২০ |
পাংতুমাই |
২১ |
জৈন্তা হিল রিসোর্ট |
২২ |
তামাবিল |
২৩ |
কৈলাশটিলা |
২৪ |
শাহী ঈদগাহ |
২৫ |
জিতু মিয়ার বাড়ি |
২৬ |
লক্ষণছড়া |
২৭ |
রায়ের গাঁও হাওর |
২৮ |
ড্রিমল্যান্ড পার্ক |
২৯ |
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
|
৩০ |
লালাখাল |
৩১ |
লালঘাট ঝর্ণা |
৩২ |
বারেক টিলা |
৩৩ |
শিমুল বাগান |
৩৪ |
যাদুকাটা নদী |
৩৫ |
নীলাদ্রি লেক |
৩৬ |
টাঙ্গুয়ার হাওর |
৩৭ |
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান |
৩৮ |
মাধবপুর লেক |
৩৯ |
শ্রীমঙ্গল |
৪০ |
আলী আমজদের ঘড়ি |
৪১ |
লোভাছড়া |
৪২ |
মাধবকুন্ড জলপ্রপাত |
সিলেট কি কারনে বিখ্যাত
সিলেট কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে বলতে গেলে সিলেট আসলে বেশ কয়েকটি জিনিস বা
স্থানের জন্য বিখ্যাত। উপরের আলোচনা থেকে আমরা সিলেটের দর্শনীয় স্থানসমূহ
বিস্তারিত জেনেছি এবার আমরা সিলেট কিসের জন্য বিখ্যাত এ সম্পর্কে জেনে নেব। সিলেট
হলো বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি প্রাচীন জনপদ। সিলেট জেলার আয়তন
হলো ৩,৪৫২ বর্গকিলোমিটার। তাই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা বলা হয় সিলেট কে।
এছাড়াও সিলেট জেলা হলো প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য লীলাভূমি।
সিলেট জেলা কমলালেবু, চা, সাতকরার আচার এবং সাত রঙের চায়ের জন্য বিখ্যাত।
সিলেটের প্রচুর পরিমাণে কমলালেবু, চা, সাতকরা উৎপন্ন হয়। এছাড়াও সিলেটের
বিখ্যাত হওয়ার পেছনে রয়েছে এর ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থান, ঐতিহ্যবাহী খাবার,
বেতশিল্প, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, এছাড়াও বিভিন্ন বিখ্যাত
ব্যক্তিবর্গের জন্মস্থান। এসব কারণে সিলেট জেলা বিখ্যাত।
সিলেটের কিছু বিখ্যাত ব্যক্তির নাম
সিলেট জেলা যেমন বেশ কিছু কারণে বিখ্যাত ঠিক তেমনি এই বিখ্যাত জেলার কিছু
বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ ছিলেন। সিলেট জেলার মধ্যে যেসব বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ
রয়েছেন তারা বেশ কয়েকটি বিষয়ের জন্য বিখ্যাত হয়েছিলেন। যেমন কেউ কেউ
শিক্ষাবিদের জন্য বিখ্যাত, কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধার কারণে বিখ্যাত, কেউ কেউ
গীতিকার ও সাহিত্যের জন্য বিখ্যাত, আবার কেউ কেউ ধর্মীয় কারণে বিখ্যাত,
এছাড়াও আরো অনেকে রয়েছেন যারা বিজ্ঞানী ও ক্রিয়াবিদের জন্য বিখ্যাত
হয়েছিলেন।নিচে সিলেট জেলার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গদের মধ্যে যারা রয়েছেন এবং
তারা যে জন্য বিখ্যাত তার একটি তালিকা দেওয়া হলো-
বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক |
বিজ্ঞানী |
গীতিকার, সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী |
ধর্মীয় ব্যাক্তিত্ব |
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ বুদ্ধিজীবী |
ক্রীড়াবিদ |
গোবিন্দ চন্দ্র দেব |
আতাউল করিম (বিজ্ঞানী) |
হাসন রাজা (বাউল শিল্পী) |
হযরত শাহজালাল (মুসলিম শাধক) |
মোহাম্মদ আতাউল গনি ওসমানী |
অলক কাপালি (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল) |
মোঃ জাফর ইকবাল |
জামিলুর রেজা চৌধুরী (শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক) |
সুবীর নন্দী (কণ্ঠশিল্পী) |
হযরত শাহপরান রাঃ (মুসলিম সাধক) |
মোহাম্মদ আব্দুর রব |
এনামুল হক জুনিয়র (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল) |
অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য |
হীরালাল চৌধুরী (মৎস্য বিজ্ঞানী) |
শাহ আব্দুল করিম (বাউল শিল্পী) |
আল্লামা মুশাহিদ আহমদ (আলেম) |
গোবিন্দ চন্দ্রদেব (শহীদ বুদ্ধিজীবী) |
কায়সার হামিদ (মোহামেডানের একজন প্রাক্তন ফুটবলার) |
দেওয়ান মুহাম্মদ আজরফ |
শশাঙ্কচন্দ্র ভট্টাচার্য (রসায়নবিদ) |
রামায়ণ দত্ত |
আব্দুল লতিফ চৌধুরি ফুলতলী (আলেম) |
লেঃ কর্নেল এ আর চৌধুরী |
নাজমুল হোসেন শান্ত (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল) |
শামসুল উলামা আবু নসর ওহিদ |
আবেদ চৌধুরী (জিনবিজ্ঞানী) |
হেমাঙ্গ বিশ্বাস (গণ সঙ্গীত শিল্পী) |
মাওলানা আতহার আলী (রাজনীতিবিদ ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব) |
কাকন বিবি (নারী মুক্তিযোদ্ধা) |
রাজেন সালেহ (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল) |
মৌলভী আব্দুল করিম |
রঙ্গলাল সেন (সমাজবিজ্ঞানী ও জাতীয় অধ্যাপক) |
রুনা লায়লা (প্লেব্যাক গায়িকা) |
আল্লামা নূরউদ্দিন গহরপুরী র. (ধর্মীয় সাধক) |
শহীদ জগৎজ্যোতি দাস |
আলফাজ আহমেদ (ফুটবলার) |
ডক্টর ত্রিগুনা সেন |
সৈয়দা রিজওয়ান হাসান (পরিবেশ বিজ্ঞানী) |
শুভ্র দেব (প্লেব্যাক সংগীত শিল্পী) |
আমিন উদ্দিন কাটিয়া ( বাংলাদেশি ইসলামী পন্ডিত) |
ক্যাপ্টেন আফতাব আলী |
হামজা চৌধুরি (ইংলিশ ফুটবলার) |
অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য |
জহিরুল আলম সিদ্দিকি (বিজ্ঞানী) |
সঞ্জীব চৌধুরী (সংগীতশিল্পী ও সাংবাদিক) |
মাওলানা ওবায়দুল হক (জাতীয় মসজিদের সাবেক খতিব) |
শহীদ নীলমণি সরকার |
আমিনুল ইসলাম বুলবুল (বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক) |
ডঃ এম এ রশীদ |
- |
সালমান শাহ (চলচ্চিত্র অভিনেতা) |
ইব্রাহিম আলী তশনা (ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও মরমী কবি) |
হারুন আহমেদ চৌধুরী |
রানী হামিদ (বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ নারী দাবাড়ু) |
রাশেদা কে চৌধুরী |
- |
খলিল উল্লাহ খান (অভিনেতা) |
ইসমাইল আলম (বাঙালি উর্দু কবি) |
মেজর জেনারেল আজিজুর রহমান |
শফিকুল হক হীরা (জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক) |
মির্জা আব্দুল হাই (কথা সাহিত্যিক) |
- |
আজিম (অভিনেতা) |
ওলিউর রহমান (ইসলামী ব্যক্তিত্ব) |
ডা. হারিছ আলী |
নাসুম আহমেদ (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল) |
আব্দুর রউফ চৌধুরী (কথা সাহিত্যিক) |
- |
বিভাস চক্রবর্তী (অভিনেতা) |
নুরুল ইসলাম ওলিপুরী |
শহীদ মনু মিয়া |
আবুল হাসান (বাংলাদেশ দল জাতীয় ক্রিকেটার) |
সৈয়দ মঞ্জরুল ইসলাম (কথা সাহিত্যিক) |
- |
নির্মলেন্দু চৌধুরী |
তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী |
কমান্ড্যান্ট মানিক চৌধুরী |
এবাদত হোসেন (বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল) |
ঝর্ণা দাস পুরকায়স্থ (কথা সাহিত্যিক) |
- |
|
মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য (বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক) |
ডা. শামসুদ্দিন আহমেদ (শহীদ বুদ্ধিজীবী) |
শাওন চৌধুরী |
ওয়াসি আহমেদ (কথা সাহিত্যিক) |
- |
সুজেয় শ্যাম |
অদ্বৈত আচার্য (বৈষ্ণব শাধক) |
রাম রঞ্জন ভট্টাচার্য (শহীদ বুদ্ধিজীবী) |
তাপস বৈশ্য |
মতিন উদ্দিন আহমেদ (কথা সাহিত্যিক) |
- |
মনিরুজ্জামান মনির |
সন্তদাস কাঠিয়াবাবা (হিন্দু আধ্যাত্মিক ধর্মগুরু) |
মোঃ আব্দুল মুক্তাদির (শহীদ বুদ্ধিজীবী) |
- |
আকাদ্দাস সিরাজুল ইসলাম (কথা সাহিত্যিক) |
- |
পন্ডিত রামকানাই দাস |
রঘুনাথ শিরোমণি (দার্শনিক ও সংস্কৃত পন্ডিত) |
অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য (শহীদ বুদ্ধিজীবী) |
- |
রামায়ণ দত্ত (মরমী কবি) |
- |
সেলিম চৌধুরী |
স্বামী নিখিলানন্দ (ধর্মগুরু) |
কমলা ভট্টাচার্য (ভাষা সৈনিক) |
- |
দুর্বিন শাহ (মরমী কবি) |
- |
বাউল কামাল পাশা |
ঠাকুর দয়ানন্দ দেব (হিন্দু ধর্মগুরু ও সমাজ সংস্কারক) |
শাহেদ আলী (ভাষা সৈনিক) |
- |
শেখ ভানু (মরমী কবি) |
- |
কারী আমির উদ্দিন |
তারাকিশোর চৌধুরী (হিন্দু ধর্মীয় সাধক) |
বীরেন্দ্র সূত্রধর (ভাষা সৈনিক) |
- |
সিলেটের বিখ্যাত খাবার কি কি
সিলেটের বিখ্যাত স্থান এবং ব্যক্তি সম্পর্কে উপরের আলোচনা থেকে আমরা বিস্তারিত
জানতে পেরেছি। সিলেটের দর্শনীয় স্থানসমূহ সম্পর্কে জানার পাশাপাশি সিলেটের
বিখ্যাত খাবার সম্পর্কে জানা দরকার। চলুন এবার জেনে নিই সিলেটের বিখ্যাত খাবার কি
কি। প্রত্যেকটি দেশ, শহর বা অঞ্চল ভেদে সবারই কিছু বিখ্যাত খাবার রয়েছে।
ঠিক তেমনি বাংলাদেশের একটি শহর সিলেট, সিলেটেরও বেশ কিছু ঐতিহ্যবাহী বিখ্যাত
খাবার রয়েছে। সিলেটের বিখ্যাত খাবার গুলো হলো- সাতকরা দিয়ে গরুর মাংস, চুঙ্গা
পিঠা, আখনি, বাকরখানী, সাত রঙের চা, মুঘলাই পরোটা, পোলাও, কোরমা, কালিয়া, রোস্ট,
বিরিয়ানি, কোফতা, জরদা, ফিরনি, পায়েস, মিষ্টি ইত্যাদি।
সিলেট যাওয়ার সঠিক সময় কখন
সিলেট ভ্রমণের উপযুক্ত সময় সম্পর্কে জানা জরুরি কেননা সঠিক সময়ে
সিলেটে যেতে না পারলে সিলেটের অনেক সুন্দর সুন্দর পর্যটন কেন্দ্রগুলোর আসল
সৌন্দর্য উপভোগ করা যাবে না। সিলেট যাওয়ার আগে আমাদের জেনে নিতে
হবে যে কোন সময় সিলেট ভ্রমণ করলে এর সকল পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্যগুলো
উপভোগ করা যাবে।
আমরা যদি সিলেট যাওয়ার উপযুক্ত সময় জানতে পারি তাহলে সিলেটের সমস্ত
সৌন্দর্যগুলো উপভোগ করতে পারবো। আবহাওয়া এবং ঋতুর পরিবর্তনের কারণে
নির্দিষ্ট কোন মাসে সিলেট যাওয়ার উপযুক্ত সময় সেটা বলা অনেকটা
কষ্টকর।তবে সিলেট যাওয়ার আদর্শ সময় হচ্ছে বর্ষাকাল। কেননা
এই বর্ষাকালে বর্ষার পানির কারণে সিলেটের অনেক পর্যটন কেন্দ্রের আসল
সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
তাই যারা সিলেট যাওয়ার জন্য আগ্রহী তারা চেষ্টা করবেন বর্ষাকালে সিলেটে
যেতে। তবে বর্ষার শুরুতে সিলেটে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। বর্ষাকালের
মাঝামাঝি এবং বর্ষাকালের শেষের সময় সিলেট যাওয়ার সবথেকে
উপযুক্ত সময়। তাই বর্ষাকালের শেষের দিকে অথবা মাঝামাঝি সময়ে
সিলেট যাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে সিলেটের সকল পর্যটন কেন্দ্রের আসল সৌন্দর্য
উপভোগ করতে পারবেন।
শীতকালে ঘোরার জন্য সিলেটের কোন জায়গা ভালো
শীতকালে সিলেটের দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে মূলত তারা জানতে চায়
যারা শীতকালে সিলেটে ভ্রমণ করতে চায়। আশা করি উপরের আলোচনা থেকে একটু
হলেও বুঝেছেন যে সিলেট ভ্রমণের উপযুক্ত সময় কোনটি। উপরের আলোচনা
থেকে আমরা বুঝলাম যে সিলেট ভ্রমণের উপযুক্ত সময় হচ্ছে বর্ষাকাল।বর্ষাকালে
মাঝামাঝি সময় অথবা এর শেষের সময়ে সিলেট ভ্রমণ করলে সিলেটের আসল সৌন্দর্য উপভোগ
করা সম্ভব।
তবে আপনি চাইলে শীতকালেও সিলেট ভ্রমন করতে পারবেন। সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ,
শীতকালেও সিলেটের কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় জমে। বর্ষাকালে সিলেটের
সৌন্দর্য বেশি উপভোগ করা যায় ঠিকই তবে শীতকালেও কয়েকটি পর্যটনকেন্দ্রে আপনি
চাইলে ভ্রমণ করতে পারবেন।শীতকালে ভ্রমণের জন্য সিলেটের কয়েকটি দর্শনীয় স্থান
সম্পর্কে নিয়েছে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
ডিবির হাওরঃ এই পর্যটন কেন্দ্রের অবস্থান বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবর্তী
মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে।ডিবির হাওর এর অবস্থান সিলেট শহর থেকে প্রায় ৪২
কিলোমিটার দূরে। ডিবির হাওরকে শাপলা ফুলের রাজ্য বলা হয়। ডিবির হাওর আবার
ডিবির বিল নামেও পরিচিত। শীতকালে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র ডিবির হাওর ভ্রমণ
করলে আপনি এখানকার অসাধারণ এবং চমৎকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে
পারবেন। শীতকালে এই ডিবির হাওরে আপনি দেখতে পাবেন লতাপাতা,
গুল্ম এবং প্রচুর লাল শাপলা যা সূর্যের লাল আভাকেও হার
মানায়।
শীতকালে এই বিলের পানি অনেক কমে যায় তবে এই বিলের
সৌন্দর্য উপভোগ করতে নৌকা দিয়ে ভ্রমণ করতে হয়। আপনি যদি এই
বিলের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে যান তাহলে পড়ন্ত রোদ পড়ার আগে এখানে
আসতে হবে।নৌকা দিয়ে বিলে ঘোরার সময় যত দূরে যাওয়া যাবে তত এই
শাপলা ফুলের চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখা যাবে।
লালাখালঃ লালাখাল সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার সন্নিকটে
অবস্থিত। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিজেই লালাখালের অবস্থান। এটি হল সিলেট
জেলার সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের স্থান এবং এই লালাখালের রাতের সৌন্দর্য
দ্বিগুণ বেড়ে যায়। লালাখালে রয়েছে স্বচ্ছ নীল জলরাশি আর দুই ধারে অপরূপ
সৌন্দর্য। লালাখালের নদীর ব্রীজের নিচে গেলে দেখতে পাবেন নীল রংয়ের পানি
এবং ব্রীজের বাম পাশে রয়েছে নৌকার ঘাট।
লালাখালের এই অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ
করতে হলে আপনাকে স্পিড বোট অথবা ছোট নৌকা দিয়ে ঘুরতে হবে। এই
লালাখালের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে আপনি ক্লান্ত হয়ে যাবেন তবুও এর সৌন্দর্য
শেষ হবে না।বেশ কিছু সময় ভ্রমণের পর অর্থাৎ প্রায় ৪৫ মিনিট যাত্রা শেষ
করলে আপনি লালাখাল চা বাগানের ফ্যাক্টরি ঘাটে পৌঁছাতে পারবেন।
জাফলংঃ লালা খালের পর শীতকালে ভ্রমণের জন্য সিলেটে আরো
একটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে সেটি হলো জাফলং। সিলেটের এই জাফলং
পাহাড়, সুন্দর ও স্বচ্ছ জলরাশি এবং নানা রঙের নুড়ি পাথরের
সমন্বয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান। সিলেটের এই জাফলং প্রকৃতি কন্যা
হিসেবে সারা দেশে পরিচিত। জাফলং খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে
অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি।
সীমান্তের ওপারে
রয়েছে ভারতের পাহাড়-টিলা। সেখানে ডাউকি পাহাড়
থেকে সারাক্ষণ ঝর্ণা আকারে জলপ্রপাত সৃষ্টি হয়েছে। জাফলঙ্গে এই
ঝর্ণা ছাড়াও রয়েছে ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ এবং সুন্দর
পানি এবং উঁচু পাহাড়ের বিশাল বনের সমারোহ। এগুলো নানাভাবে
পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি
সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা বলতে গেলে এখানে দর্শনীয় স্থান
রয়েছে অনেক। সিলেট কে পর্যটন নগরী বলা হয় কেননা এই
শহরে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সিলেটের এই দর্শনীয় স্থানগুলো
আসলেই দেখার মত। তাই সিলেটের সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কোনটি সেটি বলা
মুশকিল। তবে সিলেটের বেশ কিছু সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে। এগুলো হলো-
- জাফলং
- ডিবির হাওর
- লালাখাল
- টাঙ্গুয়ার হাওর
- মাধবকুন্ড জলপ্রপাত
- রাতারগুল
- বিছানাকান্দি
- ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর
- শ্রীমঙ্গল চা বাগান
- নীলাদ্রি লেক
- হাকালুকি হাওর
সিলেটের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা
সিলেটের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা কোনটি এ সম্পর্কে হয়তো অনেকেরই অজানা। সিলেটে বেশ
কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে মুগ্ধ করা ঝর্ণা রয়েছে। তবে সিলেটের সবচেয়ে বড়
ঝর্ণা সম্পর্কে অনেকেই জানতে চায়।সিলেটের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা হলো মাধবকুণ্ড
জলপ্রপাত। এই ঝর্ণাটি সিলেটের মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত।
এই জলপ্রপাত কে সিলেটের সবচেয়ে বড় ঝর্ণা বলা হয় কারণ এটি ১৬২ ফুট উঁচু একটি
জলপ্রপাত। পর্যটকরা প্রত্যেক বছর সিলেটের এই মাধবকুন্ড জলপ্রপাত দেখতে ভিড়
করে। মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ছাড়াও সিলেটে আরো বেশ কিছু ঝর্ণা রয়েছে সেগুলো হলো-
-
পরিকুন্ড ঝর্ণা -- এটি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায়
অবস্থিত।
-
হামহাম ঝর্ণা -- এটি বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার
রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বনবিট এলাকায় অবস্থিত।
-
সংগ্রামপুঞ্জি ঝর্ণা -- এই ঝর্ণাটি ভারতের সীমান্তে অবস্থিত।
সংগ্রামপুঞ্জি ঝরনার আরেক নাম হলো মায়াবী ঝর্ণা।
-
পান্থুমাই ঝর্ণা -- পান্থুমাই ঝর্ণা বাংলাদেশ ভারত
সীমান্তে মেঘালয় পাহাড়ের কোল ঘেষে অবস্থিত।
-
এছাড়াও আরো রয়েছে কুলুমছড়া ঝর্ণা, লালঘাট ঝর্ণা ইত্যাদি।
সিলেটের দর্শনীয় স্থান জাফলং
সিলেটের দর্শনীয় স্থান জাফলং সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।
সিলেটের অনেকগুলো দর্শনীয় স্থানের ভিতরে জাফলং একটি। এটি সিলেটের
একটি চমৎকার পর্যটন কেন্দ্র।সিলেটের এই জাফলং এর সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ
করতে বাধ্য। আপনি যদি কখনো সিলেট যাওয়ার পরিকল্পনা করে
থাকেন তাহলে জাফলং এর সৌন্দর্য উপভোগ করতে কখনো মিস করবেন না।
সিলেট ভ্রমণের সবচেয়ে আদর্শ এবং উপযুক্ত সময় হচ্ছে বর্ষাকালে মাঝামাঝি অথবা
বর্ষাকালে শেষ সময়। এই সময় সিলেটের সকল পর্যটন কেন্দ্রের আসল সৌন্দর্য
ফুটে ওঠে। তবে চাইলে শীতকালেও সিলেট ভ্রমন করা যাবে। কেননা
শীতকালেও সিলেটের বেশ কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্রে প্রচুর ভিড় জমে।শীতকালে ভ্রমণের জন্য সিলেটের আরেকটি একটি দর্শনীয় স্থান হলো
জাফলং।
সিলেটের এই জাফলং পাহাড়, সুন্দর ও স্বচ্ছ জলরাশি এবং নানা রঙের নুড়ি পাথরের
সমন্বয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত স্থান। সিলেটের এই জাফলং প্রকৃতি কন্যা হিসেবে সারা
দেশে পরিচিত। জাফলং খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। সীমান্তের ওপারে রয়েছে ভারতের পাহাড়-টিলা।
সেখানে ডাউকি পাহাড় থেকে সারাক্ষণ ঝর্ণা আকারে জলপ্রপাত সৃষ্টি
হয়েছে। জাফলঙ্গে এই ঝর্ণা ছাড়াও রয়েছে ঝুলন্ত ডাউকি ব্রিজ,
পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ এবং সুন্দর পানি এবং উঁচু পাহাড়ের বিশাল বনের
সমারোহ। এগুলো নানাভাবে পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।
তাই আপনি যদি কখনো সিলেট ভ্রমণ করেন অথবা এই শীতে সিলেট ভ্রমণের
পরিকল্পনা করছেন তাহলে সিলেটের এই জাফলং হতে পারে আপনার সবচেয়ে ভালো
পছন্দের একটি জায়গা।তবে শুধুমাত্র এই জাফলংই নয়, সিলেটে আরো অনেক
দর্শনীয় স্থান রয়েছে যেগুলো আপনার নজর কাড়তে বাধ্য।
সিলেট থেকে জাফলং ভাড়া কত
সিলেট থেকে জাফলং ভাড়া কত এ সম্পর্কে অনেকেই জানতে চান। এ সম্পর্কে
বলতে গেলে সিলেট থেকে জাফলং বেশ কয়েকটি উপায় যাওয়া
যাবে। সিলেট থেকে জাফলং বাস, সিএনজি লেগুনা, মাইক্রোবাসে
করে যাওয়া যায়। সিলেট থেকে জাফলং এর দূরত্ব হলো প্রায় ৫০
কিলোমিটার।সিলেট থেকে জাফলং যেতে সময় লাগবে প্রায় দেড় ঘন্টা থেকে ২
ঘন্টা মত।
এবার আসি সিলেট জাফলং এ যেতে কত ভাড়া লাগবে। সিলেট থেকে জাফলং
যাওয়ার বাস ছাড়ে সিলেটের কদমতলী থেকে। আর লোকাল বাস ছাড়ে সিলেট
শহরের শিবগঞ্জ বাস স্ট্যান্ড থেকে। আপনি যদি লোকাল বাস এ
করে জাফলং যেতে চান তাহলে সেখানে জনপ্রতি ৭০ টাকা করে লাগবে। আর যদি
আপনি বিরতিহীন বাস এ করে জাফলং যেতে যান তাহলে আপনার ভাড়া লাগবে জন প্রতি
১০০ টাকা করে।
এছাড়াও আপনি জাফলং যেতে চাইলে লেগুনা, সিএনজি অথবা মাইক্রোবাস করে যেতে
পারবেন।জানার সুবিধার্থে বলে দিই যে সিএনজিতে যাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ৫
জন, এর লেগুনাতে যাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১০ জন এবং মাইক্রোবাসে আসন
অনুযায়ী যতজন যেতে পারে যাওয়া যাবে। মাইক্রোবাসে রিজার্ভ
করে জাফলং গেলে যাওয়া আসা দিয়ে সবচেয়ে বেশি ভাড়া লাগবে ৩০০০
টাকা থেকে ৫০০০ টাকা।
আর যদি সিএনজিতে যেতে চান তাহলে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা
লাগবে। যদি লেগুনা করে যেতে চান তাহলে ২০০০ হাজার থেকে
২৫০০ টাকা ভাড়া লাগবে। আপনি যদি কয়েকজন একসাথে ঘুরতে যান তাহলে
আপনাদের জন্য রিজার্ভ নেওয়ায় উত্তম কেননা সবাই
মিলে একসাথে রিজার্ভ নিলে ভাড়া কম লাগতে পারে।
তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন যে আপনি যখন গাড়ি রিজার্ভ করবেন এবং
ভাড়া ঠিক করবেন তার সাথে সাথে আপনাকে আরো একটা বিষয় সম্পর্কে
ড্রাইভারকে জানাতে হবে যে আপনি কোন কোন জায়গা দেখতে চান এবং সেই জায়গা
অনুযায়ী দাম দর করবেন।
লেখক এর শেষ কথাঃ সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ
সিলেটের দর্শনীয় স্থান সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত আমাদের কম বেশি জানা
জরুরি। কেননা সিলেট বাংলাদেশের বৃহত্তম জেলা এবং এই জেলায় অনেক নজর কাড়া
দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সিলেটের এই নজর করা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে প্রতি
বছর প্রচুর পর্যটক ভিড় করে। এই আর্টিকেলে সিলেটের সকল দর্শনীয়
স্থান সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে সেই সাথে সিলেট কিসের জন্য বিখ্যাত
এবং এখানকার বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের নাম এবং খাবার সম্পর্কেও বিস্তারিত
আলোচনা করা হয়েছে।
প্রিয় পাঠক, আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হন তাহলে অন্যদের
মাঝে শেয়ার করে দিন যাতে তারাও উপকৃত হতে পারে। এছাড়া অন্যান্য সকল
বিষয় যাবতীয় সঠিক তথ্য পেতে ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করার আমন্ত্রণ রইল।
এতক্ষণ সময় ধরে আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url